বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে সর্বশেষ আপডেট: কোন কোন ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে, কেন হচ্ছে? [ফ্যাক্ট চেক]

 

ব্যাংক বন্ধ

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে সর্বশেষ আপডেট: কোন কোন ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে, কেন হচ্ছে? [ফ্যাক্ট চেক]

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে গত কয়েক মাস ধরে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে—“কোন ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে?”। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়ালেও বাস্তব চিত্র অনেকটা ভিন্ন। চলুন সর্বশেষ তথ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসিয়াল বক্তব্য ও ফ্যাক্ট চেক দেখে নেই।


ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে কি না?

বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট জানিয়েছে—বর্তমানে কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে না। আমানতকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কখনো কোনো ব্যাংক অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে “আমানত বীমা তহবিল” থেকে প্রতি আমানতকারীর জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত তাৎক্ষণিক ফেরত দেওয়া হবে, বাকিটা ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে পরিশোধ করা হবে।


কোন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হচ্ছে?

মূল ব্যাংক নয়, বরং বেশ কিছু নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (NBFI) বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো মূলত লিজিং ও ফাইনান্স কোম্পানি, যেগুলো আর্থিক দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের কারণে টিকে থাকতে পারছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণায় যে ৯টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রক্রিয়ায় রয়েছে:

  • FAS Finance
  • Bangladesh Industrial Finance Company
  • Premier Leasing
  • Fareast Finance
  • GSP Finance
  • Prime Finance
  • Aviva Finance
  • People’s Leasing
  • International Leasing

👉 এসব প্রতিষ্ঠান ব্যাংক নয়, তাই আমানতকারীদের সরাসরি প্রভাব কিছুটা সীমিত হলেও অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।


ইসলামী ব্যাংকগুলোর মার্জ (একীভূত) পরিকল্পনা

অন্যদিকে, পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা চলছে। এগুলো হলো:

  • First Security Islami Bank
  • Social Islami Bank
  • Global Islami Bank
  • Union Bank
  • EXIM Bank

এগুলো বন্ধ হচ্ছে না, বরং একীভূত হয়ে একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নতুন ইসলামী ব্যাংক গঠন করবে। এর উদ্দেশ্য হলো আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়ানো এবং খেলাপি ঋণ সংকট মোকাবিলা করা।


কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হলো?

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি বড় সমস্যায় জর্জরিত:

  • খেলাপি ঋণ (NPL) ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়া
  • পর্যাপ্ত প্রভিশন বা সঞ্চিত অর্থ না রাখা
  • দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার অভাব
  • অর্থ পাচার ও অবৈধ ঋণ বণ্টন

এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।


ফ্যাক্ট চেক:

কোনো ব্যাংক এখনো বন্ধ হয়নি।
৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায়।
৫টি ইসলামী ব্যাংক একীভূত (merger) হবে, বন্ধ নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বারবার বলেছে, আমানতকারীদের টাকা সুরক্ষিত থাকবে।


উপসংহার

যারা বলছেন “বাংলাদেশে ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে”—তাদের অনেক দাবি গুজব নির্ভর। বাস্তবে, কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক বন্ধ হয়নি। তবে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে এবং ইসলামী ব্যাংকগুলো মার্জ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও জনগণকে আশ্বস্ত করেছে—আমানতকারীদের টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

👉 তাই গুজবে কান না দিয়ে অফিসিয়াল ঘোষণা ও নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম অনুসরণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন👇

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Loading posts...