✈️ গল্প: বিদেশ ফেরত রাকিবের শিক্ষা
প্রতি বছর হাজার হাজার প্রবাসী ছুটি নিয়ে দেশে ফেরেন। হাতে থাকে সীমিত সঞ্চয়, কিন্তু আত্মীয়-স্বজনদের আবদার যেন শেষ হয় না। কেউ চায় পারফিউম, কেউ জুতা, কেউ ঘড়ি। ভালোবাসার মোড়কে এইসব আবদারই অনেক সময় প্রবাসীর আনন্দকে পরিণত করে বোঝায়।
রাকিব মালয়েশিয়ায় চার বছর ধরে কাজ করছে। এবার সে ছুটিতে দেশে ফিরবে—মনটা আনন্দে ভরে আছে। কিন্তু দেশে ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হলো ফোনের ঝড়—
“ভাই, আমার জন্য একটা ঘড়ি আনিস না?”
“রাকিব, বোনের জন্য হেয়ার ড্রায়ারটা নিতে ভুলো না।”
“দোস্ত, একটা আসল পারফিউম লাগবে।”
রাকিব প্রথমে হাসিমুখে সবার কথায় রাজি হলো। কিন্তু হিসাব করে দেখে—পুরো মাসের বেতনের বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে শুধু উপহারে। তবুও ভাবল, “সবাই তো আপনজন, কিছু না কিছু আনতেই হয়।”
দেশে এসে দেখা গেল অন্য বাস্তবতা।
প্রতিদিন বাজার, ঘোরাঘুরি, আত্মীয়দের দাওয়াত—সব জায়গায় খরচ।
দুই সপ্তাহ না যেতেই টাকার হাত খালি।
বন্ধুদের ফোন করে টাকা ধার চাইল, কেউ বলল, “দোস্ত, আমিও টাইট।”
আত্মীয়দের মুখে শুনল,
“ওমা, তুমি বুঝি খালি হাতে দেশে এসেছো?
দুই মাসেই বুঝি সব টাকা শেষ?”
রাকিব তখন বুঝল—বিদেশে থাকলেই ধনী হওয়া যায় না।
মাসে মাসে যারা পরিবারের জন্য টাকা পাঠায়,
তাদের কষ্টটা খুব কম মানুষই বোঝে।
রাতে মায়ের কোলে মাথা রেখে সে বলল,
“মা, পরের বার দেশে আসব, কিছুই আনব না।
শুধু তোমাদের সঙ্গে সময় কাটাবো, নিজের ইনকামের টাকায় নিজের মতো করে কাটিয়ে আসব।”
মা মৃদু হেসে বললেন,
“বাবা, উপহার না আনলে কেউ রাগ করবে না।
তুমি কষ্ট পেলে আমিই কষ্ট পাব।”
💡 শেষ কথা:
বিদেশ ফেরত মানেই ধনী নয়।
প্রবাসীর প্রতিটি টাকা আসে ঘাম, পরিশ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে।
তাই উপহার নয়—সময়, ভালোবাসা আর বোঝাপড়াই হোক সবচেয়ে মূল্যবান উপহার।
কারণ, মানুষ নয়, ভালোবাসাই আসল উপহার। 💛
🖊️ লেখক: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
📅 প্রকাশের তারিখ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫
📍সূত্র: The Daily71

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you for your comments.
Our Technical Support team will assist you shortly if required.
Best regards,
Thedaily71