🇸🇬 সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুসংবাদ: IPA অ্যাটেস্টেশন প্রক্রিয়া বাতিল!
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুরে কর্মরত এবং নতুন কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যাওয়া বাংলাদেশিদের জন্য এক বিশাল পরিবর্তন এসেছে। এতদিন সিঙ্গাপুরে কাজ করতে হলে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য In-Principle Approval (IPA) নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজের বাংলাদেশ হাই কমিশন অ্যাটেস্টেশন করাতে হতো। এখন সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত সিঙ্গাপুরে কাজ করতে আগ্রহী হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মীর জন্য যেমন স্বস্তির খবর, তেমনি এটি সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশ শ্রমবাজার সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
🔍 IPA কী এবং এটি এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
IPA (In-Principle Approval) হচ্ছে সিঙ্গাপুর সরকারের এক ধরনের প্রাথমিক অনুমোদনপত্র, যা সিঙ্গাপুরের নিয়োগকর্তা কোনো বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ দিতে চাইলে ইস্যু করে থাকে। এটি প্রমাণ করে যে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে কাজের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে এবং তার ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই IPA কাগজটি এতদিন বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে অ্যাটেস্ট করানো বাধ্যতামূলক ছিল। এতে করে অনেক সময়, খরচ ও ঝামেলা হতো।
🛑 অ্যাটেস্টেশন প্রক্রিয়া বাতিলের ঘোষণাটি কবে এলো?
২০২৫ সালের ১৮ এপ্রিল, বাংলাদেশ হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করে যে এখন থেকে কোনো IPA অ্যাটেস্টেশন প্রয়োজন হবে না। এই সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়।
বাংলাদেশ সরকার ও সিঙ্গাপুর সরকারের যৌথ আলোচনা এবং বিভিন্ন প্রবাসী সংগঠনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
✅ এই সিদ্ধান্তের ফলে কী কী সুবিধা হবে?
১. সময় বাঁচবে:
কোনো IPA অ্যাটেস্ট করার জন্য আর বাংলাদেশ হাই কমিশনে যেতে হবে না। এতে করে কয়েক দিনের ঝামেলা বাঁচবে।
২. খরচ কমবে:
অ্যাটেস্টেশন ফি, ট্রান্সপোর্ট খরচ এবং অন্যান্য দালালি ফি একদম কমে যাবে।
৩. প্রক্রিয়া হবে দ্রুত:
এখন IPA হাতে পাওয়ার পর সরাসরি ভিসা ও মেডিকেল প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
৪. দালালদের দৌরাত্ম্য কমবে:
IPA অ্যাটেস্টেশনের নামে যারা অতিরিক্ত টাকা নিতো, তারা আর এই সুযোগ পাবে না।
৫. কর্মীরা অধিক স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিদেশ যেতে পারবে:
এতে সরকার ও কর্মীদের মধ্যে বিশ্বাস বাড়বে এবং প্রক্রিয়াটি আরও সহজ হবে।
⚠️ যাদের ইতোমধ্যে IPA হাতে আছে, তারা কী করবেন?
যাদের IPA আগে ইস্যু হয়েছে, তারা এখন থেকে সরাসরি প্রক্রিয়া চালাতে পারবেন। আগের মত করে অ্যাটেস্ট করার প্রয়োজন নেই। তবে যেকোনো সন্দেহ বা বিভ্রান্তির জন্য হাই কমিশনের ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখতে হবে।
🌍 অন্যান্য দেশের তুলনায় সিঙ্গাপুর কেন ভালো?
সিঙ্গাপুর অনেক আগে থেকেই দক্ষ ও অদক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। এখানে নিয়মনীতি বেশ শক্ত, বেতন তুলনামূলক ভালো এবং কর্মীদের অধিকতর সুরক্ষা প্রদান করা হয়।
এছাড়াও—
-
বসবাসের পরিবেশ উন্নত
-
দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়া
-
উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা
-
বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে (কনস্ট্রাকশন, ম্যানুফ্যাকচারিং, হোটেল, ক্লিনিং, ইত্যাদি)
🇧🇩 বাংলাদেশি কর্মীদের করণীয়
এই নতুন আপডেটের ফলে যারা সিঙ্গাপুরে যেতে আগ্রহী, তাদের উচিত—
-
কোনো দালাল ছাড়া সরাসরি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা
-
সঠিক তথ্য জেনে আবেদন করা
-
হাই কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফলো করা:
🔗 https://singapore.mofa.gov.bd/
📢 প্রবাসীদের জন্য বার্তা
প্রিয় প্রবাসী ভাই ও বোনেরা, এই পরিবর্তন আপনার জীবনে নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে। আগে যেভাবে দালালের হাতে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হতেন, এখন সেখান থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আপনি সচেতন থাকলে ভবিষ্যৎ হবে নিরাপদ ও সফল।
📌 উপসংহার
IPA অ্যাটেস্টেশন প্রক্রিয়ার বাতিল হওয়া মানেই নতুন সম্ভাবনা।
এটি শুধু একটা কাগজপত্র কমানোর ব্যাপার নয় — বরং এটি বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য এক নতুন সুযোগ। সিঙ্গাপুরে কর্মসংস্থানে আগ্রহী সবাই এখন আরও সহজ, স্বচ্ছ ও দ্রুত প্রক্রিয়ায় ভিসা পেতে পারবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনে আরও বেশি দক্ষ ও যোগ্য বাংলাদেশি কর্মী সিঙ্গাপুরে কাজ করতে পারবে বলে আশা করা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you for your comments.
Our Technical Support team will assist you shortly if required.
Best regards,
Thedaily71