২০২৫ সালের সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ: বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর থেকে সময় ও দৃশ্যমানতা

 


২০২৫ সালে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ দুটি মহাজাগতিক ঘটনা, যা পৃথিবীজুড়ে আকাশপ্রেমী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর থেকে এই দুটি গ্রহণ কবে, কোথায়, কীভাবে দেখা যাবে এবং এগুলোর বৈজ্ঞানিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য কী—তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।


🌒 ২০২৫ সালের সূর্যগ্রহণ: ২৯ মার্চ

📅 তারিখ ও সময়

  • তারিখ: ২৯ মার্চ ২০২৫
  • ধরণ: আংশিক সূর্যগ্রহণ
  • সর্বাধিক গ্রহণ: ১০:৪৭:২৭ (সকালে)
  • সমাপ্তি: ১২:৪৩:৪৫ (রাতে)
  • স্থানীয় সময় (সিঙ্গাপুর): সকালে ৩:৫০ থেকে ৫:৪৩ পর্যন্ত

🌍 দৃশ্যমানতা

এই আংশিক সূর্যগ্রহণ সিঙ্গাপুর থেকে দৃশ্যমান নয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকেও এটি আংশিকভাবে দেখা যাবে না। এটি মূলত উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও উত্তর এশিয়ার কিছু অংশে দৃশ্যমান হবে।

🧭 বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব

সূর্যগ্রহণ ঘটে যখন চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে অবস্থান করে। এটি পৃথিবী থেকে চাঁদের ছায়া পড়ার কারণে সূর্যের কিছু অংশ আংশিকভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। যদিও এটি আংশিক, তবে এটি সূর্য ও চাঁদের গতির একটি চমৎকার উদাহরণ।


🌕 ২০২৫ সালের চন্দ্রগ্রহণ: ৭-৮ সেপ্টেম্বর

📅 তারিখ ও সময়

  • তারিখ: ৭-৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ধরণ: পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ (ব্লাড মুন)
  • স্থানীয় সময় (ঢাকা):
    • পেনুমব্রাল গ্রহণ শুরু: রাত ৯:২৮ (৭ সেপ্টেম্বর)
    • আংশিক গ্রহণ শুরু: রাত ১০:২৬ (৭ সেপ্টেম্বর)
    • পূর্ণ গ্রহণ শুরু: রাত ১১:৩০ (৭ সেপ্টেম্বর)
    • সর্বাধিক গ্রহণ: রাত ১২:১১ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • পূর্ণ গ্রহণ শেষ: রাত ১:৫৩ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • আংশিক গ্রহণ শেষ: রাত ৩:০১ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • পেনুমব্রাল গ্রহণ শেষ: রাত ৪:০০ (৮ সেপ্টেম্বর)
  • স্থানীয় সময় (সিঙ্গাপুর):
    • পেনুমব্রাল গ্রহণ শুরু: রাত ১১:২৮ (৭ সেপ্টেম্বর)
    • আংশিক গ্রহণ শুরু: রাত ১২:২৬ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • পূর্ণ গ্রহণ শুরু: রাত ১:৩০ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • সর্বাধিক গ্রহণ: রাত ২:১১ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • পূর্ণ গ্রহণ শেষ: রাত ৩:৫৩ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • আংশিক গ্রহণ শেষ: রাত ৫:০১ (৮ সেপ্টেম্বর)
    • পেনুমব্রাল গ্রহণ শেষ: রাত ৬:০০ (৮ সেপ্টেম্বর)

🌍 দৃশ্যমানতা

এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর উভয় স্থান থেকেই পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে। বিশ্বের প্রায় ৮৫% জনসংখ্যা এই গ্রহণ দেখতে পারবে। এটি "ব্লাড মুন" নামে পরিচিত, কারণ চাঁদ রক্তলাল রঙ ধারণ করে।

🧭 বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব

চন্দ্রগ্রহণ ঘটে যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মধ্যে অবস্থান করে, ফলে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। এই সময় চাঁদ রক্তলাল রঙ ধারণ করে, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বিক্ষিপ্ত রশ্মির কারণে হয়। এটি একটি বিরল ও চমকপ্রদ দৃশ্য।


🧘 ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য

বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশে গ্রহণের সময় কিছু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিয়ম পালন করা হয়। চন্দ্রগ্রহণের সময় সাধারণত পূজা, ব্রত, ও মন্ত্রপাঠ করা হয়। এছাড়া, গ্রহণের সময় খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকা, গর্ভবতী মহিলাদের বাইরে না যাওয়া ইত্যাদি নিয়ম পালন করা হয়।


🔭 গ্রহণ দেখার নিরাপত্তা

সূর্যগ্রহণ সরাসরি দেখা বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এটি চোখের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ সূর্যগ্রহণ চশমা ব্যবহার করে গ্রহণ দেখা উচিত। চন্দ্রগ্রহণ নিরাপদে দেখা যায়, তবে দূষণমুক্ত ও উন্মুক্ত স্থান থেকে এটি দেখা উত্তম।


📸 গ্রহণের ছবি তোলার টিপস

  • সূর্যগ্রহণ: বিশেষ সূর্যগ্রহণ চশমা ব্যবহার করে ছবি তুলুন।
  • চন্দ্রগ্রহণ: ট্রাইপড ব্যবহার করে দীর্ঘ এক্সপোজার দিয়ে ছবি তুলুন।
  • দৃশ্যমানতা: দূষণমুক্ত ও উন্মুক্ত স্থান থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করুন।

🗓 ২০২৫ সালের অন্যান্য গ্রহণ

  • ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আংশিক সূর্যগ্রহণ
  • ২৭-২৮ আগস্ট ২০২৫: আংশিক চন্দ্রগ্রহণ

📺 লাইভ স্ট্রিমিং ও তথ্যসূত্র

গ্রহণের সময় লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে আপনি এই মহাজাগতিক ঘটনা দেখতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থাগুলো তাদের ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এসব সম্প্রচার করে।


২০২৫ সালের সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ আমাদের মহাবিশ্বের অপূর্ব সৌন্দর্য ও রহস্যের প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে। এই গ্রহণগুলোর মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম ও সৌরজগতের গতিবিধি সম্পর্কে আরও জানতে পারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Loading posts...