কলকাতা থেকে ১৭২ কিলোমিটার দূরে পলাশী।
বহরমপুরগামী এক্সপ্রেস বাসে করে মীরা পলাশী স্টপেজ।
সেখান থেকে ব্যাটারিচালিত টোটো গাড়িতে চেপে সোজা পলাশী। নামলাম পলাশী স্মৃতিস্তম্ভের পাশে। টোটোটি বাঁ দিকের পথ ধরে চলে গেল ভাগীরথীর তীরে রামনগর নদীঘাটে।
পলাশীর সেই আম্রকানন আর নেই। গাছ কেটে তৈরি করা হয়েছে ফসলের খেত।
পলাশীর সেই আম্রকানন আর নেই। গাছ কেটে তৈরি করা হয়েছে ফসলের খেত।
সেখানে ফলে তিল, পাটসহ নানা ফসল।
সেদিনের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কোনো চিহ্নই কি আর অবশিষ্ট নেই?
সেদিনের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কোনো চিহ্নই কি আর অবশিষ্ট নেই?
রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে চোখে পড়ল একটু দূরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। পলাশী যুদ্ধের স্মৃতিবাহী মনুমেন্ট।
১৫ মিটার উঁচু স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে লেখা: ‘ব্যাটল ফিল্ড অব পলাশী, জুন ২৩, ১৭৫৭’।
এ স্তম্ভ ইংরেজরা তৈরি করেছে পলাশীর যুদ্ধের বিজয়ের স্মারক হিসেবে।
এটি এখন দেশবাসীর কাছে ‘বিশ্বাসঘাতকতার স্তম্ভ’।
পলাশী যুদ্ধের ২৫০ বছর পূর্তিতে এই স্মৃতিস্তম্ভের পাশে ছোট্ট আরেকটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। তাতে লেখা: ‘পরদেশগ্রাসীদের বিজয়স্তম্ভ নয়; সিরাজ, মীর মদন, মোহনলালের নাম হোক অক্ষয়।’ এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ফোরাম।
একটু দূরে স্মৃতিস্তম্ভে ঢোকার বাঁ পাশে দাঁড়িয়ে আছে নবাব সিরাজের আবক্ষ মূর্তি।
পলাশী যুদ্ধের ২৫০ বছর পূর্তিতে এই স্মৃতিস্তম্ভের পাশে ছোট্ট আরেকটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। তাতে লেখা: ‘পরদেশগ্রাসীদের বিজয়স্তম্ভ নয়; সিরাজ, মীর মদন, মোহনলালের নাম হোক অক্ষয়।’ এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ফোরাম।
একটু দূরে স্মৃতিস্তম্ভে ঢোকার বাঁ পাশে দাঁড়িয়ে আছে নবাব সিরাজের আবক্ষ মূর্তি।
এই মূর্তির নিচে লেখা ‘বিদেশী বেনিয়া বশ্যতা বিরোধী জোহাদি নায়ক সিরাজদৌল্লা’।
মনুমেন্টটির চারদিকে অযত্নের ছাপ। চারদিকে জঙ্গল জন্মেছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে এই স্মৃতিস্তম্ভ।
স্মৃতিস্তম্ভের কাছের চায়ের দোকানদার অশোক বাজোয়াল বললেন, এই জায়গায় একসময় প্রচুর আমগাছ ছিল। রানি ভবানীর আমবাগান ছিল এটি।
স্মৃতিস্তম্ভের কাছের চায়ের দোকানদার অশোক বাজোয়াল বললেন, এই জায়গায় একসময় প্রচুর আমগাছ ছিল। রানি ভবানীর আমবাগান ছিল এটি।
এখন রাস্তা হয়েছে। একটু দূরে চিনিকল হয়েছে।
ওই যুদ্ধে ইংরেজ সেনাদের মোকাবিলা করার জন্য কামানের গোলায় আগুন দিতে গিয়ে কামান ফেটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন নবাব সিরাজের সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান মীর মদন। স্মৃতিস্তম্ভের পেছনের পথ ধরে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে গেলে মীর মদনের সমাধিস্থল। চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও সমাধি ঢেকে আছে জঙ্গলে।
ওই যুদ্ধে ইংরেজ সেনাদের মোকাবিলা করার জন্য কামানের গোলায় আগুন দিতে গিয়ে কামান ফেটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন নবাব সিরাজের সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান মীর মদন। স্মৃতিস্তম্ভের পেছনের পথ ধরে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে গেলে মীর মদনের সমাধিস্থল। চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও সমাধি ঢেকে আছে জঙ্গলে।
এখানে সমাধিস্থ করা হয় নবাবের আরও দুই বীর কমান্ডার বাহাদুর আলী খান এবং ক্যাপ্টেন নৌয়ে সিং হাজরাকে।
বন্দুকধারী ইউনিটের অধিনায়ক ছিলেন বাহাদুর আলী খান। আর গোলন্দাজ বাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন নৌয়ে সিং হাজরা। যুদ্ধের পরপরই এখানে গোপনে তাঁদের সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
সমাধিস্থলে যাওয়ার কোনো পাকা রাস্তা নেই। পাটখেতের আল ধরে যেতে হয়।
সমাধিস্থলে যাওয়ার কোনো পাকা রাস্তা নেই। পাটখেতের আল ধরে যেতে হয়।
স্থানীয় চাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল বললেন, পলাশী স্মৃতিস্তম্ভ থেকে এই এক কিলোমিটার কাঁচা পথকে পাকা করে রাস্তার দুই ধারে আলো দিলে পর্যটকেরা এখানে সহজভাবে আসতে পারতেন। কারণ, বর্ষাকালে জমির আলে কাদা জমে যায়। হাঁটা দুষ্কর হয়ে পড়ে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার আবক্ষমূর্তিবিশ্বনাথ বললেন, ‘শুনেছি ৬০ বছর আগেও এই মাঠে অন্তত ইট-মাটির তৈরি ৫০টি নকল কামান ছিল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার আবক্ষমূর্তিবিশ্বনাথ বললেন, ‘শুনেছি ৬০ বছর আগেও এই মাঠে অন্তত ইট-মাটির তৈরি ৫০টি নকল কামান ছিল।
পরবর্তী সময়ে গ্রামবাসী ইটের প্রয়োজনে সেগুলো তুলে নিয়ে গেছে।’
১৭৫৭ সালের ২৩ জুনের পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য হেরে যায় নবাব বাহিনী।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুনের পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য হেরে যায় নবাব বাহিনী।
এই প্রহসনের যুদ্ধ বাংলায় কোম্পানি শাসনের পথ সুগম করে দেয়। যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে সিরাজ ফিরে যান মুর্শিদাবাদে।
তারপর বিশ্বাসী খোঁজাকে নিয়ে তিনি নৌকাযোগে রাজমহলে যাওয়ার জন্য উঠে পড়েন নৌকায়। সঙ্গে স্ত্রী লুৎফা বেগম এবং চার বছরের কন্যা উম্মে জহুরা।
কিন্তু দানশা ফকিরের চক্রান্তে তিনি ভগবানগোলায় ধরা পড়েন।
তারপর মীর জাফরের জামাতা মীর কাসিম সিরাজকে বেঁধে নিয়ে আসেন মুর্শিদাবাদে। ১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই মীর জাফরের পুত্র মিরন মোহাম্মদী বেগকে দিয়ে হত্যা করান সিরাজকে। অবসান হয় একটি যুগের।
PROTHOM ALO
PROTHOM ALO
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you for your comments.
Our Technical Support team will assist you shortly if required.
Best regards,
Thedaily71