মানুষ কেন মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হয়ে ওঠেন? অনেক উত্তর থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সারস অ্যাকাডেমির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পেশা স্বাধীন, নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করা যায়, ওপর থেকে চাপ দেওয়ার মতো কেউ নেই বলেই মানুষ ফ্রিল্যান্সিং বেছে নিচ্ছে। দ্বিমত পোষণ করার কোনো কারণ নেই, তবে কথাগুলো শুনতে যত সহজ মনে হোক, তত সহজ কিন্তু না। নিজের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে, নিজের সৃজনশীলতার পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে হবে, সবচেয়ে বড় কথা—সফল হতে হলে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। তবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় মানুষ বেশ কিছু ভুল করে, যা এড়িয়ে যেতে পারলে নিজের কাজটা অনেক সহজ ও উপভোগ্য মনে হতে পারে। এখানে তেমনি কিছু বারবার করা ভুলের কথা বলা হলো।
কম কাজ করা
স্বাধীন পেশা, মাথার ওপর ছড়ি ঘোরানোর কেউ নেই—খুবই ভালো কথা। কিন্তু এতে অনেক দায়িত্ব আপনার কাঁধে চলে আসে। কী কী সেবা দিচ্ছেন, সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে তা প্রচার করা, নিজের দক্ষতা বাড়ানো, কাজ ও আয়ের হিসাব রাখা এবং সে অনুযায়ী নতুন কাজ খুঁজে বের করা—মোট কথা নিজেকে উদ্যোক্তা ভাবতে হবে, প্রচুর কাজ করতে হবে। অনেক ফ্রিল্যান্সার এই ভুলটা করে বসেন যে, সুযোগ পায়ে হেঁটে আমার ঘরে চলে আসবে।
যেকোনো কাজ শুরু করা
নিজের দক্ষতা অনুসারে যে কাজটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সে কাজটি করার চেষ্টা করুন। কাজটি কেমন তা যেমন জানতে হবে, কাজটি যিনি করিয়ে নেবেন তাঁর সম্পর্কেও খোঁজখবর করে জেনে নিতে হবে। মোটকথা যেকোনো কাজ পেলেই শুরু করা যাবে না, রীতিমতো গবেষণা করে তবেই নতুন কাজে হাত দিতে হবে।
সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করা
এই কাজটা নতুন ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করে থাকেন। কাজ পাওয়ার জন্য এত মরিয়া হলে তো চলবে না। মনে রাখবেন এটা আপনার আয়ের একটা উৎস। তা ছাড়া কম মূল্য নির্ধারণ আপনার কাজের মান সম্পর্কে ক্লায়েন্টের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি করতে পারে।
নিরাশ হয়ে পড়েন অনেকে
অন্যান্য কাজের মতো ফ্রিল্যান্সিং পেশায় বছরের পর বছর ধরে নিজেকে, নিজের দক্ষতার উন্নয়ন করে যেতে হয়। সফলতার জন্য অনেক কাজ করতে হয়। শুরুর দিকে অনেক বাধাবিপত্তি আসে, অনেক সময় এসব ছেড়ে নতুন কিছু করতে ইচ্ছা করে। এত সহজে হার মানা যাবে না।
জীবনের অন্যান্য দিক ভুলে যাওয়া
বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সময়ের এত পার্থক্য যে এখানে রাত তো ওখানে দিন। তার ওপর নিয়মিত আয় আসতে থাকলে অনেকে কাজে এত মগ্ন হয়ে পড়েন যে পরিবার-প্রিয়জনদের কথা ভুলে যান। এটা কখনোই করবেন না। নিজের জীবন, সে জীবনের সঙ্গে জড়িত মুখগুলোর গুরুত্ব আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি হওয়া উচিত।
কাজের পর যোগাযোগ না করা
অনলাইন কাজের বাজারগুলোতে কাজ তো আছেই, তবে আগে কাজ করেছেন এমন কোনো গ্রাহকের কাজ করা বেশি ভালো। কারণ আপনি তাঁর সম্পর্কে জানেন। তাই কাজ শেষ হয়ে গেলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করবেন না। মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দিতে পারেন। যদি তাঁর কাছে কাজ না থাকে তো আপনার সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাব্য সব রাস্তা তাঁকে জানিয়ে রাখুন।
সুসংগঠিত না হওয়া
চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নিজের উন্নতির জন্যও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার লোক পাবেন। ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিজের অভিভাবক কিন্তু নিজেই। নিজেকে সুসংগঠিত করতে হবে। গ্রাহক কাজটি যেভাবে করতে বলবে সেভাবেই করতে হবে, পাশাপাশি আপনার মাথায় যদি আরও ভালো কিছু থাকে তো পরামর্শ দিতে ভুলবেন না।
যোগাযোগ না রাখা
কোনো কাজ শুরুর আগে কাজটি সম্পর্কে পুরোপুরি জেনে নিতে হবে। কোনো বিভ্রান্তি থাকলে চলবে না। কাজ শুরুর পরও গ্রাহক বা ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, কাজটি ঠিকভাবে করছেন কি না....
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you for your comments.
Our Technical Support team will assist you shortly if required.
Best regards,
Thedaily71